ডেটা এন্ট্রি করে আয়ের সম্ভাবনা
বর্তমানে তথ্যপ্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের তথ্যব্যবস্থাপনা করার কাজ বেড়ে চলেছে। বিভিন্ন ধরনের কাজের মধ্যে তুলনামূলক সহজ থাকায় ডেটা এন্ট্রির কাজটা অনেকেই করতে পারেন।কম্পিউটারের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট ধরনের তথ্য বা উপাত্ত (ডেটা) এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় বা একটি প্রোগ্রাম থেকে অন্য আরেকটি প্রোগ্রামে নিয়ে যাওয়াই ডেটা এন্ট্রির কাজ।এ ক্ষেত্রে ডেটা বিভিন্ন রকমের হতে পারে, যার মধ্যে কোনো তথ্যকে কম্পিউটারে লিখে বা কম্পিউটারের কোনো একটি প্রোগ্রামের ডেটা একটি ফাইলে সংরক্ষণ করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। ডেটা এন্ট্রির ধারণা দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে এবং বর্তমানে ইন্টারনেটের কল্যাণে নানা ধরনের তথ্যের আদান-প্রদান বেড়েছে। পাশাপাশি ডেটাকে নির্দিষ্টভাবে তৈরি করার কাজও বেড়েছে অনেকখানি। ইন্টারনেট আগের চেয়ে সহজলভ্য হওয়ায় দেশে বসে বিদেশের কোনো প্রতিষ্ঠানের ডেটা এন্ট্রি করার সুযোগ এখন অনেক বেশি। সবচেয়ে সুবিধা হলো দলগত বা প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ডেটা এন্ট্রির কাজগুলো যেমন করা যায়, তেমনি একা একাও করা যায়।শুধু চাই ইন্টারনেট সংযোগসহ একটি কম্পিউটার আর কম্পিউটারে টাইপ করার দক্ষতা। যা প্রয়োজন সাধারণভাবে কম্পিউটার ও ইন্টারনেট জ্ঞান থাকলে ডেটা এন্ট্রির কাজ করা সম্ভব। তবে বিভিন্ন ধরনের ডেটা এন্ট্রি কাজের ক্ষেত্রে দরকার হবে বিশেষ কিছু দক্ষতা। কিছু কাজ রয়েছে, যেখানে শুধু ডেটা কপি এবং পেস্ট করা ছাড়া তেমন কোনো দক্ষতা লাগে না।সাধারণত ডেটা এন্ট্রির কাজ করতে হলে কম্পিউটারে দ্রুত টাইপ করা, ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের তথ্যের খোঁজ পাওয়ার ক্ষমতা, বিভিন্ন ওয়েবসাইট, ওয়েব নির্দেশিকা, ফোরাম সম্পর্কে ভালো ধারণা, মাইক্রোসফট ওয়ার্ড ও এক্সেলে পরিপূর্ণ দখল থাকতে হবে। তবে ইংরেজিতে ভালো জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। কোথায় পাওয়া যাবে ডেটা এন্ট্রির কাজগুলো ইন্টারনেটে বিভিন্ন ধরনের ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং ওয়েবসাইটে পাওয়া যায়। যেখানে বিনামূল্যে নিবন্ধন করে কাজ পাওয়া যাতে পারে।এর বাইরেও বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে বিপুল পরিমাণ ডেটা এন্ট্রির কাজ পাওয়া যায়। তবে সে ক্ষেত্রে নিবন্ধনের জন্য নির্দিষ্ট ফি দিতে হয়। এসব সাইটে নিবন্ধন করার আগে জানা সম্ভব নয়, কী ধরনের ডেটা এন্ট্রি করতে হবে। তাই এ ধরনের সাইটে নিবন্ধিত না হওয়াই ভালো বলে মনে করেন অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা। বিনামূল্যে রেজিস্ট্রেশনের মাধ্যমে ডেটা এন্ট্রি কাজ পাওয়া যায় এ রকম কিছু ওয়েবসাইট হচ্ছে: www.getacoder.com, www.getafreelancer.com, www.odesk.com, www.scriptlance.comইত্যাদি। এ সাইটগুলোতে ডেটা এন্ট্রি কাজের জন্য রয়েছে আলাদা বিভাগ। প্রতিটি সাইটে মাত্র কয়েক ডলার থেকে শুরু করে কয়েক হাজার ডলারের প্রকল্পও আছে। এ সাইটগুলোতে সাধারণত ডেটা এন্ট্রির পরিমাণের ভিত্তিতে অর্থ দেওয়া হয়। পাশাপাশি অনেক ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থও দেওয়া হয়। ডেটা এন্ট্রির রকমফের বিনামূল্যে নিবন্ধনের মাধ্যমে ফ্রিল্যান্সিং ওয়েবসাইটগুলোতে বিভিন্ন ধরনের কাজ রয়েছে। এর মধ্যে বিভিন্ন সাইট থেকে নির্দিষ্ট কিছু উপাত্ত এক্সেলের একটি ফাইলে সংরক্ষণ করা, ছবি অথবা ভিডিও বিভিন্ন ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা, বিভিন্ন ওয়েবসাইটে, গ্রুপে কিংবা ফোরামে পরিচয় করিয়ে দেওয়া, বিভিন্ন ধরনের ওয়েবসাইটের একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর ফিচার লেখা, অনলাইনে বিভিন্ন ধরনের পণ্য বিক্রিতে সাহায্য করা ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। এ ছাড়া ইন্টারনেটে খোঁজাখুঁজি করে একটি নির্দিষ্ট শহরের বিভিন্ন ধরনের প্রতিষ্ঠানের নাম-ঠিকানা থেকে শুরু করে ফোন নম্বর এবং অন্যান্য তথ্য বের করে একটি নির্দিষ্ট ফাইলে সংরক্ষণ করা, রেকর্ড করা অডিও শুনে ইংরেজিতে ফাইল তৈরি কিংবা প্রতিলিপি তৈরি করা, বিভিন্ন ধরনের পিডিএফ ফাইলের তথ্যাদি, ছবি থেকে শুরু করে ফুটনোট ইত্যাদি অপরিবর্তিত রেখে ওয়ার্ড ফাইলে প্রতিস্থাপন করা, কয়েকটি অক্ষর ও সংখ্যার সমন্বয়ে একধরনের নিরাপত্তা কোড বা ছবি নির্দিষ্ট সাইটে প্রকাশকরার কাজও রয়েছে। প্রোগ্রামিংয়ের মাধ্যমে ডেটা এন্ট্রি কিছু ডেটা এন্ট্রির কাজ কম্পিউটারের প্রোগ্রাম দিয়ে করা সম্ভব। প্রোগ্রামিংয়ে দক্ষতা থাকলে ডেটা এন্ট্রির কাজগুলো সহজেই করা সম্ভব। নির্দিষ্ট কাজের ক্ষেত্রে প্রোগ্রাম তৈরি করে ডেটা এন্ট্রির কাজটাকে সহজ করে ফেলা যায়। তবে বিশেষ ধরনের কাজের ক্ষেত্রে কম্পিউটারে প্রোগ্রাম লেখার প্রয়োজন পড়েন। চাহিদা কেমন উন্নত দেশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ডেটা এন্ট্রির কাজগুলো করানোর জন্য লোক খুঁজতে থাকে। এসব কাজের জন্য মূলত সহজে এবং সস্তায় ডেটা এন্ট্রি করতে পারবে এমন লোক বা প্রতিষ্ঠান খোঁজা হয়। এ তালিকায় ভারতীয় উপমহাদেশ এগিয়ে আছে। তবে কাজ দেওয়ার আগে প্রতিষ্ঠানগুলো একটি ব্যাপারে নিশ্চয়তা চায়। তা হচ্ছে, কাজটা পূর্ণাঙ্গভাবে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হবে কি না। ডেটা এন্ট্রি নিয়ে ভার্সিটি অ্যাডমিশন ডট কমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আননূর রহমান বলেন, ‘ডেটা এন্ট্রি কাজের চাহিদা প্রচুর। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন করে খুব সহজে আরও ভালো কাজ পাওয়া সম্ভব।’ আমাদের সম্ভাবনা ‘উপমহাদেশের দেশগুলোর মধ্যে আমাদের দেশের অবস্থান অনেক ভালো বলা যায়। ডেটা এন্ট্রির কাজের জন্য আমাদের যথেষ্ট দক্ষ জনশক্তি রয়েছে, যাদের স্বল্প প্রশিক্ষণের মাধ্যমে কাজের উপযোগী করে তোলা সম্ভব।’ বললেন ওয়েবকর্্যাফট বাংলাদেশের পরিচালক জাকারিয়া চৌধুরী। তিনি আরও জানান, শুরুতে ডেটা এন্ট্রির কাজ পেতে হলে নিজে নিজে চেষ্টা করার পাশাপাশি যেসব প্রতিষ্ঠান ইতিমধ্যেই কাজ করছে, তাদের সঙ্গে কাজ করা যেতে পারে। লক্ষ রাখুন ডেটা এন্ট্রির কাজগুলো সহজ হলেও এর কিছু সমস্যা রয়েছে। শুরুতে কাজ করতে গেলে কিছু অসুবিধা হতে পারে, যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে−শুরুতে নিলাম ডাকলে (বিড করা) কাজ পাওয়া একটু কঠিন। তবে নিজস্ব মেধা ও দক্ষতা প্রমাণের মাধ্যমে কয়েকটি কাজ সফলভাবে শেষ করতে পারলেই অনেক কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা হয়ে যায়। ডেটা এন্ট্রির কাজগুলো কিছুটা সময়সাপেক্ষ এবং একঘেয়ে হয়ে পড়ে। সে ক্ষেত্রে মনোযোগ দিয়ে কাজ করে যেতে হবে। কিছু কাজ রয়েছে, যা একজনের পক্ষে নির্দিষ্ট সময়ে সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। এ জন্য প্রয়োজনে একাধিক লোক নিতে হবে।ফাইল ও ছবি এ ধরনের তথ্য ইন্টারনেটে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সংযোগ লাগবে। ডেটা এন্ট্রি করতে হয় খুবই সতর্কতার সঙ্গে, যেন তা নির্ভুল হয়। তাই শত ভাগ নির্ভুল টাইপ করা ও কাজের সময় পূর্ণ মনোযোগ রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সতর্কতা বর্তমানে ডেটা এন্ট্রি কাজের পরিধি অনেক বিস্তৃত। তবে এ কাজে কিছু সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। শুরুর দিকে ধীরেসুস্থে ভেবেচিন্তে বিড করার পাশাপাশি কাজ বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিছুটা বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেওয়া প্রয়োজন। বিশেষ করে যেসব গ্রাহকের কাছ থেকে ভবিষ্যতে আরও বড় কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, সেসব কাজ পাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) কোষাধ্যক্ষ ফারহানা এ রহমান বলেন, ‘ডেটা এন্ট্রির ক্ষেত্রে ভাষাজ্ঞানটা খুব জরুরি। তবে কাজ শুরু করার আগে কোন ধরনের ডেটা এন্ট্রি করতে হবে, তা জেনে ওই বিষয় সম্পর্কে কিছু জেনে নেওয়া উচিত। লক্ষ রাখতে হবে যেহেতু কাজটাই ডেটা এন্ট্রির, যতটা সম্ভব নির্ভুলভাবে ও ভালোভাবে কাজটা যেন সম্পন্ন হয়।’ শুরুতে একাই শুরু করতে পারেন ডেটা এন্ট্রির কাজ। ধীরে ধীরে কাজ করার মাধ্যমে বড় কাজ পেলে প্রয়োজনীয় লোকবল নেওয়ার মাধ্যমে একটি দল গঠন করে নিতে পারেন।
রেন্ট-এ-কোডার পরিচিতি
রেন্ট-এ-কোডার হচ্ছে ইন্টারনেট ভিত্তিক মার্কেটপ্লেস যেখানে প্রোগ্রামারদেরকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ করে দেয়। এই সাইটে প্রোগ্রামিং এর পাশাপাশি গ্রাফিক্স ডিজাইন, রাইটিং, ডাটা এন্ট্রি, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন (SEO), গেম ডেভেলপমেন্ট সহ অসংখ্য ধরনের কাজ পাওয়া যায়। অতীতে কম্পিউটার ভিত্তিক ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানকে তাদের লোকাল বা আঞ্চলিক সার্ভিসের উপর নির্ভর করতে হত। এতে সার্ভিসের গুণগত মান ভাল হত না এবং আনেক ক্ষেত্রে সার্ভিস চার্জ অনেক বেশি হত। বর্তমানে রেন্ট-এ-কোডারের মত সাইটগুলো আউটসোর্সিং-এর যে সুযোগ করে দিয়েছে তাতে ক্লায়েন্টরা পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বাছাই করে তুলনামূলকভাবে কম খরচে ভাল লোক দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারছে। অন্যদিকে প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, অপারেটর এবং অন্যান্য প্রোফেশনালরা তাদের ঘরে বসে বৈদিশিক মূদ্রা অর্জন করতে পারছে।
রেন্ট-এ-কোডারে দুই ধরনের ব্যবহারকারী আছে। যারা এই সাইটে প্রজেক্ট পোস্ট করে তাদেরকে বলা হয় বায়ার (Buyer) এবং যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদেরকে বলা হয় কোডার (Coder)। বলা বাহুল্য, এই সাইটে কোডার বলতে কেবলমাত্র প্রোগ্রামারই নয় বরং সকল ফ্রিল্যান্সারকেই বোঝায়। এ পর্যন্ত প্রায় ২,১৭,০০০ কোডার রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং প্রতিদিনই এই সংখ্যা বাড়ছে।
রেন্ট-এ-কোডারে দুই ধরনের ব্যবহারকারী আছে। যারা এই সাইটে প্রজেক্ট পোস্ট করে তাদেরকে বলা হয় বায়ার (Buyer) এবং যারা এই কাজগুলো সম্পন্ন করে তাদেরকে বলা হয় কোডার (Coder)। বলা বাহুল্য, এই সাইটে কোডার বলতে কেবলমাত্র প্রোগ্রামারই নয় বরং সকল ফ্রিল্যান্সারকেই বোঝায়। এ পর্যন্ত প্রায় ২,১৭,০০০ কোডার রেজিস্ট্রেশন করেছে এবং প্রতিদিনই এই সংখ্যা বাড়ছে।
বর্তমান সময়ে জুমলা হচ্ছে ওয়েব ডেভেলপারদের কাছে একটি আলোচিত বিষয়। এটি দিয়ে একদিকে যেমন খুব সহজেই ওয়েবসাইট তৈরি করা যায়, অন্যদিকে জুমলা হতে পারে ফ্রিল্যান্সারদের আয়ের প্রধান উৎস। প্রায় সব ফ্রিল্যান্সিং সাইটেই জুমলার কাজ পাওয়া যায়। তবে শুধু জুমলা ডেভেলপারদের জন্য সম্পূর্ণ একটি ফ্রিল্যান্সিং পোর্টাল হচ্ছে জুমল্যান্সার্স। ফ্রিল্যান্সিং নিয়ে ধারাবাহিক লেখার এই পর্বে জুমল্যান্সার্স সাইটের বিভিন্ন ফিচার নিয়ে আলোচনা করা হলো।
জুমলা
জুমলা (Joomla) হচ্ছে একটি Content Management System যা সংক্ষেপে CMS নামে পরিচিত। এর সাহায্যে অনায়াসে যেকোনো ধরনের ওয়েবসাইট, কোনো ধরনের প্রোগ্রামিং বা টেকনিক্যাল জ্ঞান ছাড়াই তৈরি করা সম্ভব। সহজ ইন্টারফেস এবং নিজের ইচ্ছেমতো এটি পরিবর্তন করে নেবার ক্ষমতা জুমলাকে একটি শক্তিশালী ওয়েবসাইট তৈরির সফটওয়্যারে পরিণত করেছে। সর্বোপরি জুমলা একটি উন্মুক্ত সোর্স সফটওয়্যার, যা জুমলার ওয়েবসাইট থেকে বিনামূল্যে সংগ্রহ করা যায়। জুমলার সাইটের ঠিকানা হচ্ছে www.joomla.org। জুমলা পিএইচপি এবং মাইএসকিউএল দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তাই জুমলা ইনস্টল করতে প্রথমে কমপিউটারে এপাচি ওয়েব সার্ভার ইনস্টল করে নিতে হবে।
জুমলা দিয়ে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ওয়েবসাইট তৈরি হচ্ছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : কর্পোরেট ওয়েবসাইট বা পোর্টাল, কর্পোরেট ইন্ট্রানেট এবং এক্ট্রানেট; অনলাইন ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র এবং বিভিন্ন ধরনের প্রকাশনা; ই-কমার্স সাইট এবং অনলাইন রিজার্ভেশন, সরকারি বিভিন্ন সাইট, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ের জন্য ওয়েবসাইট, অলাভজনক এবং বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবসাইট, কমিউনিটিনির্ভর পোর্টাল, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইট এবং ব্যক্তিগত বা পারিবারিক হোমপেজ।
জুমল্যান্সার্স সাইট
জুমলা দিয়ে ওয়েবসাইট তৈরি করে যারা অনলাইনে আয় করতে আগ্রহী, তাদের জন্য চমৎকার একটি ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং সাইট হচ্ছে এই জুমল্যান্সার্স। সাইটটির ঠিকানা হচ্ছেwww.joomlancers.com। প্রতিদিন সাইটটিতে প্রায় ১২৫ থেকে ১৫০টি প্রজেক্ট পাওয়া যায়। সাইটে এ পর্যন্ত প্রায় ১০ হাজার বায়ার বা ক্লায়েন্ট এবং প্রায় ৭ হাজার জুমলা ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপার রেজিস্ট্রেশন করেছে। এই সাইটে কমিশন হিসেবে প্রতিটি প্রজেক্টের শতকরা ২০ ভাগ অর্থ কোডারকে পরিশোধ করতে হয়। সাইটের গোল্ড মেম্বারদের কোনো ফি পরিশোধ করতে হয় না। একজন সাধারণ ব্যবহারকারী মাসে ১৫টি বিড করতে পারবে, অন্যদিকে একজন গোল্ড মেম্বার মাসে ১৫০টি বিড করতে পারে। গোল্ড মেম্বার হতে হলে প্রতি মাসে ৩০ ডলার করে পরিশোধ করতে হয়। তবে ৯৫ ডলার দিয়ে এক বছরের জন্য গোল্ড মেম্বার হওয়া যায়। সাইটটিতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য কোনো ফি দিতে হয় না, উপরন্তু রেজিস্ট্রেশন করার পর প্রত্যেক ফ্রিল্যান্সারকে ২ ডলার বোনাস দেয়া হয়।
জুমল্যান্সার্স যেভাবে কাজ করে
জুমল্যান্সার্স সাইটটি অন্যান্য সাধারণ ফ্রিল্যান্সিং সাইটের মতোই কাজ করে :
০১. প্রথমে বায়ার বা ক্লায়েন্ট একটি নতুন প্রজেক্ট পোস্ট করে।
০২. ফ্রিল্যান্সাররা ওই প্রজেক্টে বিড বা আবেদন করে।
০৩. তাদের মধ্য থেকে বায়ার একজন ফ্রিল্যান্সারকে নির্বাচিত করে।
০৪. এরপর বায়ার সাইটের Escrow অ্যাকাউন্টে প্রজেক্টের সম্পূর্ণ টাকা জমা রাখে, যা কাজ সম্পন্ন হবার পর ফ্রিল্যান্সারকে টাকা পাবার নিশ্চয়তা দেয়।
০৫. ফ্রিল্যান্সার তার কাজ শুরু করে এবং সম্পন্ন হবার পর বায়ারের কাছে পাঠিয়ে দেয়।
০৬. প্রজেক্ট সঠিকভাবে সম্পন্ন হলে বায়ার কাজটি গ্রহণ করে এবং পরিশেষে Escrow থেকে টাকা ফ্রিল্যান্সারের অ্যাকাউন্টে চলে আসে।
নানা ধরনের প্রজেক্ট
সাইটটিতে Joomla ছাড়াও Drupal, osCommerce, Wordpress-এর অল্পসংখ্যক কাজ পাওয়া যায়। সাইটের প্রথম পৃষ্ঠায় সর্বশেষ প্রজেক্টগুলো প্রদর্শন করা হয়। একটি প্রজেক্টে বায়ার তার চাহিদা অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের বৈশিষ্ট্য যোগ করতে পারে।
বৈশিষ্ট্যগুলো হচ্ছেFeatured Project: এ ধরনের প্রজেক্টে একজন ফ্রিল্যান্সার তার ব্যক্তিগত তথ্য যেমন ই-মেইল ঠিকানা, ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেঞ্জার আইডি, ফোন নম্বর ইত্যাদি বায়ারকে দিতে পারে। ফলে বায়ার প্রয়োজনে ফ্রিল্যান্সারদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারবে।
Gold Member Project: শুধু গোল্ড মেম্বাররা এই ধরনের প্রজেক্টে বিড করতে পারে।Sponsored Project : এই ধরনের প্রজেক্টে বায়ার নিজের ব্যক্তিগত যোগাযোগের তথ্যাদি পাবে।
Hide Bidding Project : এই ধরনের প্রজেক্টে একজন ফ্রিল্যান্সারের বিডের মূল্য অন্যরা দেখতে পায় না।
Nonpublic Project : এই ধরনের প্রজেক্টগুলোকে সার্চ ইঞ্জিনের স্পাইডার থেকে লুকিয়ে রাখা হয় এবং শুধু লগইন করার পর প্রথম পৃষ্ঠায় দেখা যায়।
Private Project : এ ধরনের প্রজেক্টে শুধু আমন্ত্রিত ফ্রিল্যান্সাররাই বিড করতে পারে।
Location Project : বায়ারের ঠিক করে দেয়া দেশের ফ্রিল্যান্সাররাই এই ধরনের প্রজেক্টে বিড করতে পারে।
Urgent Project : এই ধরনের প্রজেক্টে বিড করার সময়সীমা হচ্ছে ৩ দিন।
একটি প্রজেক্টে বিড করার পদ্ধতি
এই সাইটে উন্মুক্ত পদ্ধতিতে বিড করতে হয়। অর্থাৎ একজন ফ্রিল্যান্সারের বিডে উল্লেখিত মূল্য,সময় এবং মন্তব্য যেকেউ দেখতে পায়। তবে বায়ার ইচ্ছে করলে তথ্যগুলো গোপন রাখতে পারে। বিড উন্মুক্ত থাকলেও পিএম বা প্রাইভেট ম্যাসেজ অপশনের মাধ্যমে বায়ারের সাথে একান্তভাবে যোগাযোগ করা যায়। বিড করার জন্য প্রথমে সাইটে রেজিস্ট্রেশন এবং লগইন করে নিতে হবে। একটি প্রজেক্ট পৃষ্ঠার নিচের অংশে বিড করার ফরম পাওয়া যায়, যাতে আপনার বিডের মূল্য,প্রজেক্ট সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাব্য সময়, নিজের সম্পর্কে বর্ণনা, বায়ারের সাথে একান্তভাবে যোগাযোগ করার জন্য PM ইত্যাদি তথ্য দিতে হয়।
অর্থ উত্তোলনের উপায়সমূহ
জুমল্যান্সার্স সাইট থেকে তিনটি পদ্ধতিতে অর্থ উত্তোলন করা যায়। প্রথম পদ্ধতি হচ্ছে Paypal, যা আমাদের দেশে সাপোর্ট করে না। দ্বিতীয় পদ্ধতি হচ্ছে MoneyBookers- এটি দিয়ে অর্থ উত্তোলন করতে জুমল্যান্সার্স সাইটকে ১ ডলার চার্জ দিতে হয়। পরে www.MoneyBookers.com সাইট থেকে আরেকটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ফি দিয়ে আপনার মাস্টার্ড কার্ড বা ব্যাংকে টাকা স্থানান্তর করতে পারবেন। তৃতীয় পদ্ধতি হচ্ছে Wire Transfer, যা দিয়ে সরাসরি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্টে টাকা নিয়ে আসতে পারবেন। এর জন্য খরচ পড়বে ৩৫ ডলার।
পরিশেষে
জুমলা দিয়ে কোনো ধরনের প্রোগ্রামিং ছাড়াই ওয়েবসাইট তৈরি করা সম্ভব হলেও নতুন কোনো মডিউল বা ফিচার তৈরি করতে অবশ্যই আপনাকে প্রোগ্রামিং জানতে হবে। জুমল্যান্সার্স সাইটে জুমলা সেটআপ করা থেকে শুরু করে, টেম্পলেট ডিজাইন করা, মডিউল/প্লাগইনস তৈরি করা,কোড পরিবর্তন করা, অন্য একটি ওয়েবসাইটকে ক্লোন করা, জুমলার কনফিগারেশন পরিবর্তন করা ইত্যাদি কাজ পাওয়া যায়। অর্থাৎ জুমলার প্রোগ্রামার, ডিজাইনার, ওয়েবমাস্টার-সবার জন্যই জুমল্যান্সার্স হতে পারে আদর্শ অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং মার্কেটপ্লেস।
গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার হচ্ছে বিভিন্ন ধরনের ব্যবসায়ী ও ফ্রিল্যান্সার বা স্বাধীনভাবে যারা কাজ করেন তাদের জন্য অনলাইনে সাক্ষাতের স্থান৷ এই সাইটে একজন ক্রেতা বা বায়ার প্রজেক্ট সাবমিট করেন এবং একজন ফ্রিল্যান্সার একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে ক্রেতার চাহিদা অনুযায়ী সার্ভিস যোগায়৷ এই সাইটে একজন ফ্রিল্যান্সারকে বলা হয় প্রোভাইডার৷ সাইরে কমিশন কম হওয়ায় এবং গোল্ড মেম্বার ও ট্রায়াল প্রজেক্ট ইত্যাদি সুযোগসুবিধা থাকায় প্রতিদিন অসংখ্য ফ্রিল্যান্সার এই সাইটে রেজিস্ট্রেশন করছেন৷ বর্তমানে এই সাইটে মোট ফ্রিল্যান্সারের সংখ্যা ৭ লাখের ওপরে৷ সাইটে প্রজেক্টের সংখ্যাও নেহাত কম নয়৷ প্রতিদিন বিভিন্ন বিভাগে অসংখ্য নতুন নতুন কাজ পাওয়া যায়৷ প্রতিদিন গড়ে ৩,০০০ কাজ এ সাইটে পাওয়া যাবে৷ প্রজেক্টের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রোগ্রামিং, গ্রাফিক্স ডিজাইন, ডাটা এন্ট্রি, ডাটা প্রসেসিং, কপিরাইটিং, ওয়েবসাইট ডেভেলপমেন্ট, মার্কেট রিসার্চ, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন, ওয়েব প্রোমোশন ইত্যাদি৷ অর্থাৎ প্রায় সব ধরনের কমপিউটার ব্যবহারকারীর জন্য এই সাইটে কাজ পাওয়া যায়৷
রেজিস্ট্রেশনের ধাপসমূহ:
সাইটটিতে রেজিস্ট্রেশন করার জন্য মেনু থেকে Sign Up নামের লিঙ্কটিতে ক্লিক করুন এবং নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন-
Step 1: New User Signup
Username :
এই ধাপে একটি Username দিন, যা পরে সাইটে লগইন করার সময় প্রয়োজন পড়বে৷
E-mail Address :
আপনার ই-মেইল অ্যাড্রেসটি দিন৷
Terms & Conditions :
সাইটের শর্তাবলীর সাথে সম্মত হলে এটি সিলেক্ট করুন৷
Gold Member :
গোল্ড মেম্বার হতে চাইলে এটি সিলেক্ট করুন৷ তবে রেজিস্ট্রেশন করার সময় এটি সিলেক্ট করার প্রয়োজন নেই৷ পরে যেকোনো সময় আপনি গোল্ড মেম্বার হতে পারবেন৷
Step 2 : Email Verification
প্রথম ধাপ সফলভাবে সম্পন্ন করার পর আপনাকে একটি নিশ্চিতকরণ ই-মেইল পাঠানো হবে৷ ই-মেইলের সাথে একটি লিঙ্ক এবং একটি কোড পাঠানো হবে৷ এই ধাপটি আপনি যেকোনো এক পদ্ধতিতে সম্পন্ন করতে পারেন নিশ্চিতকরণ লিঙ্কটিতে ক্লিক করে অথবা কোডটি কপি করে সাইটে পেস্ট করার মাধ্যমে (চিত্র-২)৷ এই পদ্ধতিতে আপনি সঠিক ই-মেইল ঠিকানা প্রদান করেছেন কি না তা যাচাই করা হয়৷
Step 3 : User Profile
সর্বশেষ এই ধাপটি একটু সময় নিয়ে সঠিকভাবে সম্পন্ন করুন৷ এই অংশ কয়েকটি ভাগে বিভক্ত-
Account details :
এ অংশে আপনার পুরো নাম, কোম্পানির নাম অথবা ডাক নাম এবং লগইন করার জন্য পাসওয়ার্ড দিন৷
Address details :
আপনার পূর্ণাঙ্গ ঠিকানা লিখুন৷
Notifications : ই-মেইলের মাধ্যমে নতুন প্রজেক্ট সম্পর্কে জানতে চাইলে এটি সিলেক্ট করুন৷
Service Provider profile :
এই অংশে আপনি যে বিষয়গুলোতে দক্ষ, তা উল্লেখ করুন এবং কাজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে একটি প্রোফাইল তৈরি করুন৷ বায়ার এই প্রোফাইলের ইউজার অ্যাকাউন্ট ম্যানেজমেন্ট সাইটে লগইন করার পর Manage Account নামের পৃষ্ঠা থেকে আপনার অ্যাকাউন্টের বিভিন্ন তথ্য পরিবর্তন, বিড করা প্রজেক্ট, অ্যাকাউন্ট ব্যালেন্স, টাকা উত্তোলন ইত্যাদি করতে পারবেন৷ ম্যানেজ অ্যাকাউন্ট পৃষ্ঠাটি কয়েকটি ভাগে বিভক্ত (চিত্র-৩)৷
News for members :
সাইটের সর্বশেষ খবর, বিভিন্ন ধরনের সাহায্যকারী তথ্য এই পৃষ্ঠায় পাওয়া যাবে, যা নতুন ইউজারদের অবশ্যই ভালোভাবে পড়ে নেয়া উচিত৷
Account Details :
এই পৃষ্ঠায় বিভিন্ন ধরনের সাহায্যকারী নিবন্ধের লিঙ্ক, আপনার ব্যালেন্সের সর্বশেষ অবস্থা, আপনার প্রোফাইল পৃষ্ঠার লিঙ্ক, গোল্ড মেম্বার হবার লিঙ্ক, অর্থাৎ উত্তোলন করার লিঙ্ক ইত্যাদি রয়েছে৷
Edit Account Info :
এই পৃষ্ঠায় আপনার ব্যক্তিগত তথ্য এবং প্রোফাইলের তথ্য পরিবর্তন করতে পারবেন৷
Buyer Activity :
ইচ্ছে করলে নিজেও বায়ার হিসেবে প্রজেক্ট সাবমিট করে অন্য প্রোভাইডার দিয়ে কাজ করিয়ে নিতে পারেন৷ হতে পারে আপনি বড় একটি প্রজেক্টের কোনো একটি অংশ করতে পারছেন না, তখন ওই অংশের জন্য একটি নতুন প্রজেক্ট তৈরি করে অন্য প্রোভাইডারের সাহায্য নিতে পারেন৷ অথবা আপনার ব্যক্তিগত কোনো কাজ সম্পন্ন করার জন্য বায়ার হিসেবে সাইটে আত্মপ্রকাশ করতে পারেন৷
Provider Activity :
এই পৃষ্ঠায় প্রোভাইডার হিসেবে আপনার বিড করা প্রজেক্ট, রেটিং, বায়ারের রিভিউ ইত্যাদি ব্যবস্থাপনা করতে পারবেন৷
Affiliate Activity :
কাজ না করেও এই সাইট থেকে আপনি আয় করতে পারেন, আর তা হচ্ছে অন্য ইউজারকে এই সাইটে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে৷ আর তার জন্য এই অংশে একটি লিঙ্ক পাবেন, যা ই-মেইল করে বা আপনার ওয়েবসাইটে রেখে অন্য ইউজারকে রেজিস্ট্রেশন করার আমন্ত্রণ জানাতে পারেন৷ আপনার আমন্ত্রিত ইউজার যা আয় করবে তার একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ আপনি পাবেন৷
Payment Transactions :
এই পৃষ্ঠায় অর্থ সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য পাবেন৷ এর মধ্যে রয়েছে টাকা উত্তোলন, ব্যালেন্স দেখা, Escrow Payment, অন্য ইউজারের অ্যাকাউন্টে অর্থ হস্তান্তর ইত্যাদি৷
একটি প্রজেক্টের বিভিন্ন তথ্য
একটি প্রজেক্টের পৃষ্ঠায় বিভিন্ন ধরনের তথ্য থাকে, তার মধ্য থেকে উল্লেখযোগ্য অংশগুলো হচ্ছে (চিত্র-৪)৷ Budget : প্রজেক্টের বায়ারের বাজেট এখানে প্রদর্শন করা হয়৷ বিড করার সময় আপনাকে এ সীমার মধ্যে মূল্য উল্লেখ করতে হবে৷
Project Creator :
এই অংশে বায়ারের নাম, রেটিং, বায়ার সম্পর্কে অন্যান্য প্রোভাইডারের ফিডব্যাক/রিভিউ ইত্যাদি প্রদর্শন করে৷ বায়ারকে প্রাইভেট ম্যাসেজের জন্য Post PM নামের একটি বাটন এই অংশে পাওয়া যাবে৷ প্রজেক্টে বিড করার পরই কেবল প্রাইভেট ম্যাসেজ দিতে পারবেন৷
Description :
প্রজেক্টের বিবরণ এ অংশে পাওয়া যাবে৷ তবে অনেক সময় বায়ার পুরো বিবরণ এ অংশে প্রকাশ করে না৷ তাই বিড করার পর বায়ারের সাথে PM-এর মাধ্যমে যোগাযোগ করে প্রজেক্টের সম্পূর্ণ বিবরণ জেনে নিন৷
View Project Clarification Board :
প্রজেক্টের কোনো রিকোয়ারমেন্ট বুঝতে না পারলে এই অংশের মাধ্যমে আপনি বায়ারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন যা অন্য প্রোভাইডাররাও দেখতে পারবে এবং তারাও তাদের মন্তব্য দিতে পারবে৷ সব প্রোভাইডারের অংশ নেয়ার মাধ্যমে প্রজেক্টের রিকোয়ারমেন্ট পরিষ্কার করাই হচ্ছে এই অংশের মূল উদ্দেশ্য৷
Bid on This Project :
সর্বশেষে প্রজেক্টে বিড করতে এই বাটনে ক্লিক করুন৷ একটি নতুন উইন্ডো আসবে যেখানে তিনটি টেক্সটবক্স দেখতে পাবেন৷ প্রথমটি বিডের মূল্যের জন্য, দ্বিতীয়টি হচ্ছে এই প্রজেক্টটি আপনি কতদিনে সম্পন্ন করতে পারবেন তা উল্লেখ করার জন্য এবং সর্বশেষ টেক্সটবক্সে বিড সংক্রান্ত আপনার মন্তব্য বা আপনার নিজের সম্পর্কে কোনো তথ্য দেয়ার জন্য৷
রেন্ট-এ-কোডার (www.RentACoder.com) সাইটের সাথে এই সাইটের মূল পার্থক্য হলো এখানে বিড উন্মুক্ত থাকে৷ অর্থাৎ একজন প্রোভাইডারের বিড করা অর্থ মূল্য, ডেডলাইন সময়, বিড করার সময় মন্তব্য অন্য প্রোভাইডার দেখতে পারে৷ এটি একদিকে যেমন প্রোভাইডারদের মধ্যে প্রতিযোগিতার মনোভাব প্রকাশ করে, অন্যদিকে নতুনদের জন্য একটু অসুবিধার সৃষ্টি করে৷ তাই অনেকে বিড করার সময় একটি গড় মূল্য উল্লেখ করে আর Post PM-এর মাধ্যমে বায়ারকে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে কম মূল্যে কাজ করে দেয়ার প্রস্তাব করে৷ তবে মনে রাখবেন বায়ার যদি আপনার প্রাইভেট মেসেজটি চেক না করে, তাহলে সে জানতেও পারবে না আপনি কত ডলারে কাজ করতে ইচ্ছুক৷ তাই এটি অনেক সময় বায়ারের ইচ্ছের ওপর নির্ভর করে থাকে৷
টাকা উত্তোলনের উপায়সমূহ
গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার সাইট থেকে বিভিন্ন উপায়ে টাকা উত্তোলন করা যায়৷ তার মধ্যে রয়েছে Payoneer Debit Card, Moneybookers, Wire Transfer ইত্যাদি৷ টাকা উত্তোলনের সবচেয়ে সহজ উপায় হচ্ছে পেওনার ডেবিট কার্ডটি৷ সাইটে আপনার অ্যাকাউন্টে ৩০ ডলার থাকলে আপনি এই কার্ডের জন্য রেজিস্ট্রেশন করতে পারবেন৷ এরপর ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে এই মাস্টারকার্ডটি আপনার ঠিকানায় পৌঁছে যাবে৷ এটি দিয়ে বিভিন্ন ব্যাংকের এটিএম থেকে সরাসরি টাকা উত্তোলন করতে পারবেন৷
গোল্ড মেম্বারদের জন্য সুবিধাসমূহ
গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার সাইটে ইউজারদের জন্য গোল্ড মেম্বার নামে একটি বিশেষ ব্যবস্থা চালু আছে৷ গোল্ড মেম্বার হতে আপনাকে প্রতি মাসে ১২ ডলার পরিশোধ করতে হবে৷ এর সুবিধাগুলো হচ্ছে :
০১. প্রতি প্রজেক্ট শেষে সাইটকে কোনো কমিশন দিতে হয় না৷ অন্যদিকে সাধারণ ব্যবহারকারীকে প্রতি প্রজেক্টের মোট মূল্যের ১০% কমিশন হিসেবে দিতে হয়৷
০২. সাধারণ ব্যবহারকারী হলে আপনি মাসে ১৫টির বেশি বিড করতে পারবেন না৷ অন্যদিকে গোল্ড মেম্বার হলে মাসে সর্বোচ্চ ১৬০টি প্রজেক্টে বিড করতে পারবেন৷
০৩. সাইটে অনেক প্রজেক্ট আছে যেখানে শুধু গোল্ড মেম্বারই বিড করতে পারে৷
০৪. গোল্ড মেম্বারদের নামের পাশে সবসময় একটি G চিহ্ন থাকে, যা তাদের গোল্ড মেম্বারশিপ প্রকাশ করে৷
০৫. গোল্ড স্ট্যাটাস থাকার কারণে গোল্ড মেম্বারদের অন্যদের চেয়ে প্রজেক্ট পাবার সম্ভাবনা বেশি থাকে৷
নতুনদের জন্য ট্রায়াল প্রজেক্ট
গেট-এ-ফ্রিল্যান্সার সাইটে ট্রায়াল প্রজেক্ট নামে অনেক প্রজেক্ট পাওয়া যায়, যেখানে শুধু একজন নতুন প্রোভাইডার বিড করতে পারেন৷ ফলে এসব প্রজেক্টের মাধ্যমে নতুন ইউজাররা খুব সহজেই তাদের প্রথম কাজ সম্পন্ন করতে পারেন৷ তবে একটি প্রজেক্ট সম্পন্ন করে বায়ারের রেটিং বা ফিডব্যাক পাবার পর আপনি আর কোনো ট্রায়াল প্রজেক্টে বিড করতে পারবেন না৷ যেসব প্রজেক্টের নামের পাশে মানুষের ছবিযুক্ত আইকন থাকে, সেগুলো হচ্ছে ট্রায়াল প্রজেক্ট৷ প্রোভাইডারদের জন্য গাইডলাইন
০১. একটি প্রজেক্ট সম্পর্কে পূর্ণাঙ্গ ধারণা না নিয়ে কাজ শুরু করা উচিত নয়৷ বায়ার তাদের চাহিদা বিড রিকোয়েস্টের সাথে পুরোপুরি উল্লেখ নাও করতে পারেন৷ তাই যতটুকু সম্ভব তাদেরকে প্রশ্ন করুন৷ এরপর প্রজেক্টের রিকোয়ারমেন্ট আপনার নিজের ভাষায় বায়ারকে লিখে জানান৷ এতে বায়ারের চাহিদা সম্পর্কে আপনি নিশ্চিত হতে পারবেন এবং কাজ করার সময় আপনার পরিশ্রম অনেকখানি কমে যাবে৷ প্রশ্ন করলে বায়ার খুশি হন এবং আপনার আগ্রহ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পারেন৷
০২. একটি কাজ পাবার পর বায়ার সাধারণত Escrow নামের ফিচারের মাধ্যমে সাইটে প্রজেক্টের পুরো টাকা জমা রাখেন৷ ফলে কাজ শেষে আপনার পাওনা টাকা সাথে সাথে পাবার সম্ভাবনা নিশ্চিত হয়৷ কোনো কারণে টাকা জমা না রাখলে তাকে সাইটের Escrow -তে টাকা জমা রাখতে অনুরোধ করুন৷
০৩. পুরো কাজকে কয়েকটি ধাপে ভাগ করুন এবং প্রতিটি ধাপ শেষ হবার পর পর বায়ারকে দেখান৷
০৪. ডেডলাইন সময় শেষ হবার আগেই পুরো কাজ সম্পন্ন করুন এবং বায়ারের কাছে পাঠিয়ে দিন৷
০৫. বায়ারের কাছে কাজ পাঠানোর আগে ভালো করে রিকোয়ারমেন্ট আরেকবার দেখে নিন এবং পুরো কাজ ভালো করে পরীক্ষা করুন।
শেষ কথা
যেকোনো সাইটে সফলতার মূলমন্ত্র হচ্ছে সাইটটির সব নিয়মকানুন সঠিকভাবে মেনে চলা৷ এ সাইটের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম নয় তাই এখনই বিড না করে সাইটটি ভালো করে দেখে নিন এবং এর নিয়মকানুনের সাথে অভ্যস্ত হবার চেষ্টা করুন৷ প্রথম অবস্থায় কাজ পাওয়া একটা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার, কিন্তু কয়েকটি কাজ করার পর নতুন কাজ পাওয়া খুব একটা কঠিন নয়৷